প্রবল সমালোচনার মুখে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা বা জোটে যাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ বার্তা দেন তিনি।
আখতার বলেছেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির সঙ্গেই অন্য দলগুলোর মতভিন্নতা পরিলক্ষিত হতো। সেখানে সংস্কারের পয়েন্টগুলোতে ন্যাচারালি (স্বাভাবিকভাবেই) এনসিপি, জামায়াত এবং অন্য দলগুলো একমত হয়েছে। সেক্ষেত্রে সংস্কারের বিষয়, দেশটাকে নতুন করে গড়া, নতুনভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে গড়ে তোলার জন্য যে রাজনীতি, সে রাজনীতির প্রতি যে কমিটমেন্ট সেটাকেই নির্বাচনী রাজনীতিতে জোটের বা সমঝোতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধানতম বিবেচ্য বিষয় হিসেবে এটাকে মূল্যায়ন করছি।’
প্রসঙ্গত, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠন করতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যেকোনো সময় এ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। তবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা নিয়ে এনসিপির অনেক নেতা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শনিবার কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ নেতা এই জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতায় আপত্তি জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এদিকে জোট ঘোষণার আগেই এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। তিনি ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন এনসিপির আরও কয়েক নেত্রীও।
তবে এনসিপি সূত্র বলছে, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্য ২১৪ জন। এর মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট নিয়ে পক্ষে ‘মত দিয়েছেন’ ১৮৪ জন কেন্দ্রীয় নেতা।
অন্যদিকে জামায়াতের সঙ্গে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক জোট বা সমঝোতার তীব্র বিরোধিতা করে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে একটি ‘বিস্ফোরক’ চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন শীর্ষ নেতা। চিঠিতে এই জোটের প্রচেষ্টাকে ‘জাতির সঙ্গে প্রতারণা’ এবং ‘আদর্শিক আত্মহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
সমঝোতার বিরোধিতা করে স্মারকলিপি দেয়া নেতারা হলেন- যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, ফরিদুল হক, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া এবং ইমন সৈয়দ; কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা শ্যামা দেব, নুসরাত তাবাসসুম, খালেদ সাইফুল্লাহ; দক্ষিণাঞ্চলের দায়িত্বে থাকা মো. শওকত আলী, মো. ওয়াহিদ উজ জামান, নফিউল ইসলাম, হামযা ইবনে মাহবুব, নয়ন আহামেদ ও আসাদ বিন রনি; উত্তরাঞ্চলের সংগঠক দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী; যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ শাহ্, খান মো. মুরসালীন, মো. সাদ্দাম হোসেন এবং আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল প্রমুখ।



