Image description

জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচিতে নামতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি রাজনৈতিক দল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, খুব শিগগিরই দলগুলো পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেবে।

আট দলের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনের জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে বিবেচিত জাতীয় পার্টি (জাপা) ও ১৪–দলীয় জোটভুক্ত দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। এছাড়া জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়েও তারা একমত হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে—জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ ও আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস, নূরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদ, মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি এবং সরওয়ার কামাল আজিজীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

আগামীকাল (রোববার) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সংবাদ সম্মেলন করে যুগপৎ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে। একইভাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সোমবার পুরানা পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিন্ন কর্মসূচি প্রকাশ করবে।

জামায়াতের এক শীর্ষ নেতা যুগপৎ কর্মসূচির সিদ্ধান্তের সত্যতা স্বীকার করেছেন। আরিফুল ইসলাম আদীব, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, বলেন—“এনসিপি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চায়। যদিও সব দল সরাসরি গণপরিষদ নির্বাচনের পক্ষে নয়, তবে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিয়ে সবাই একমত।”

আট দলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন চান এবং তা জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হওয়া উচিত। তবে পিআর পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। কেউ সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ উভয় ক্ষেত্রেই পিআর দাবি করছে, আবার কেউ কেবল উচ্চকক্ষেই পিআরের পক্ষে। ফলে প্রতিটি দল তাদের নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরবে।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টি ও ১৪–দলীয় জোটের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে আট দলের নেতারা একমত হয়েছেন। তাদের মতে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলে তার সহযোগী ও সমর্থক জোটের কার্যক্রমও বন্ধ হওয়া উচিত।

উল্লেখ্য, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি এর আগেও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ও মৌলিক সংস্কারের দাবি জোরালোভাবে তুলেছিল। এবার তারা আরও পাঁচটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অভিন্ন দাবি ও অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামতে প্রস্তুত হচ্ছে, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

সুত্র: প্রথম আলো