Image description

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি থাকায় সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি থেকে সরে এসেছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল, সারাদেশের ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে সচিব কমিটির মতে, এত অল্প সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো কার্যকর সুফল পাওয়া যাবে না, বরং এতে বৈষম্য তৈরি হবে।

বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ বাস্তবায়িত হলে একই শিক্ষককে ২০টিরও বেশি বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতে হতো। এতে নিয়মিত শ্রেণিকাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে কমিটি মত দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে অর্থের সংস্থান তৈরি হলে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষকের পদ সৃজন এবং সে অনুযায়ী নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে রোববার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন সৃষ্টি করা সংগীত শিক্ষক পদ বাতিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে বাতিল করা হয়েছে নতুন সৃষ্টি করা শরীরচর্চা শিক্ষকের পদটিও।

এ দুটি পদ বাদ দেওয়ার পাশাপাশি 'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫' এ কিছু 'শব্দগত পরিবর্তন' আনা হয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন।

গত ২৮ অগাস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি হয়। নতুন বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের দুটি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি সৃষ্টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম গত ১৬ সেপ্টেম্বর সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের পদ সৃষ্টির সমালোচনা করে প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

একই দিনে এক সেমিনারে সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির কঠোর সমালোচনা করেন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা।

এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপকে ‘ইসলামবিরোধী এজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে এ সংক্রান্ত বিধিমালা বাতিলের দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম।