
ইসলামী ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৩৬৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম, নাবিল গ্রুপের এমডি মো. আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ মোট ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান বুধবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। পরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
অভিযোগে বলা হয়, নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান নাবা অ্যাগ্রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের নামে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ইসলামী ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি হিসাব খোলা হয়। নাবিল গ্রুপের এমডি আমিনুল ইসলাম কর্মচারী ও আত্মীয়দের পার্টনার দেখিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই কোম্পানি তৈরি করেন।
২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি নাবা অ্যাগ্রো ৩০০ কোটি টাকা বাই-মুরাবাহা ঋণের আবেদন করে এবং জামানত হিসেবে ৩০ কোটি টাকার টিডিআর প্রস্তাব দেয়। গম, সয়াবিন তেল ও পাম ওয়েল কেনার উদ্দেশ্য দেখানো হলেও যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট উইংয়ের সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয় এবং নির্বাহী কমিটি নেতিবাচক তথ্য জেনেও ঋণ অনুমোদন দেয়। পরে ২ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরিপত্র জারি হয়। একই বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সুবিধা হিসেবে আরও ৩৭০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়।
এর মধ্যে ৩৬৩ কোটি টাকা সোনালী ট্রেডার্স ও সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে চেকের মাধ্যমে অর্থ এস আলম অ্যান্ড কোং এর ন্যাশনাল ব্যাংক হিসাবের পুরনো ঋণ পরিশোধে ব্যবহার হয়। কোনো বাস্তব পণ্য কেনাবেচার প্রমাণ পাওয়া যায়নি, বরং জাল চালানপত্র ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
দুদকের ভাষ্য, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যোগসাজশে এই বিনিয়োগ অনুমোদন করেন। এতে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূৃলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।