Image description

কিশোরগঞ্জে সেই কবর খোদক মনু মিয়া আর নেই। সামাজিক মাধ্যমে খবরটি জানিয়েছেন অভিনেতা খায়রল বাসার।

আজ শনিবার নিজের ফেসবুকে মনু মিয়ার সঙ্গে দুটি ছবি প্রকাশ করেছেন খায়রুল বাসার। সঙ্গে লিখেছেন, মনু কাকা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

এরপর লেখেন, এতদিন তিনি ঢাকায় ছিলেন ৩ দিন আগে উনি বাড়ি ফিরেছেন। বলছিলেন আগের চেয়ে বেশ সুস্থ আছেন। ওনার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আল্লাহ কবুল করেছেন। সুস্থ থেকেই উনি আল্লাহ ডাকে ফিরতে চেয়েছিলেন এই দোয়াও চাইতেন-বলতেন। হয়তো নিজ গ্রাম নিজের জন্মস্থান থেকেই আল্লাহ তাকে ডেকে নিবেন এই চেয়েছেন আল্লাহ। উনার মহৎ কর্মের ফলস্বরূপ আল্লাহ নিশ্চয়ই উনাকে ওনার স্বপ্নের ঘোড়া উপহার দেবেন। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুন। সবাই মনু কাকার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে শান্তিতে রাখুন।

গোরখোদক হিসেবে কিশোরগঞ্জে বেশ পরিচিত। এর অন্যতম কারণ, কবর খননের কাজ করে কোনো পারিশ্রমিক বা বকশিশ নেন না। কারও মৃত্যুসংবাদ কানে আসামাত্রই খুন্তি, কোদালসহ প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘোড়ায় করে ছুটে যান কবরস্থানে। দূর-দূরান্তে কবর খনন করতে যাওয়ার জন্য তার একমাত্র সঙ্গী লাল রঙের ঘোড়া।

কদিন আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে ঢাকায় এলে দুষ্কৃতিকারীরা তার ঘোড়াটি হত্যা করে। এরপরই আলোচনায় আসেন মনু মিয়া। সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয় বিষয়টি। নজরে আসে খায়রুল বাসারেরও। তিনি মনু মিয়াকে ঘোড়া কিনে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

মনু মিয়ার সঙ্গে দেখাও করেন অভিনেতা। কিন্তু মনু মিয়া ঘোড়ার পরিবর্তে দোয়া চান খায়রুল বাসারের কাছে। সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে অভিনেতা লিখেছিলেন, মনু চাচা দোয়া ছাড়া কিছু চান না আপনাদের কাছে। উনি আপনাদের জন্য দোয়া করেন আপনারা ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। এ ঘটনার মাস যেতেই অভিনেতার লেখায় উঠে এলো মনু মিয়ার মৃত্যুর খবর।

কবর খননের কাজ করে জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর পার করে দিয়েছেন মনু মিয়া। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বকশিস নিতেন না এজন্য। জীবদ্দশায় খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর।