Image description

অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া রানের পাহাড় টপকে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল। রান তাড়া করায় এটাই নতুন বিশ্বরেকর্ড। শেষবার ২০১৭ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারতের কাছেই। তারপর আজ। হিলিদের জয়রথ থামালেন হারমানপ্রীতেরা।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভারতের কাছে ৫ উইকেটে হারে অস্ট্রেলিয়া, বিদায় নেয় ফাইনালের আগেই।

এদিন মুম্বাইয়ের মাঠে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লিচফিল্ডের সেঞ্চুরিতে ৩৩৮ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। জেমাইমা রদ্রিগেজের ১২৭ ও অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের ৮৯ রানে ভর করে সেই রান তাড়া করে জিতল ভারত। একদিনের ক্রিকেটে এটি ভারতের সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। আগামী রোববারের ফাইনালে ভারতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। অর্থাৎ, একদিনের বিশ্বকাপে এবার পাওয়া যাবে এক নতুন চ্যাম্পিয়ন।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। ব্যাট করতে নেমে এদিন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অস্ট্রেলিয়া কাপ্তান। একবার জীবন পেয়েও মাত্র ৫ রানে ক্রান্তি গৌড়ের বলে আউট হন হিলি। অপর ওপেনার ফিবি লিচফিল্ড প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছিলেন। পাওয়ার প্লে কাজে লাগান তিনি। লিচফিল্ডকে সঙ্গ দেন এলিস পেরি। দু’জনে মিলে দ্রুত রান করছিলেন। দুই ব্যাটারের মধ্যে ১৫৫ রানের জুটি হয়।

শতরান করেন লিচফিল্ড। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তার ঝোড়ো ইনিংস চাপ বাড়াচ্ছিল ভারতের উপর। সেই জুটি ভাঙেন আমনজ্যোৎ কৌর। ১১৯ রানের মাথায় লিচফিল্ডকে আউট করেন তিনি। সেই জুটি ভাঙার পর কিছুটা চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের স্পিনারেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। হাত খুলতে না পেরে পর পর উইকেট পড়তে থাকে। পেরি করেন ৭৭ রান। বেথ মুনি ২৪ রানে আউট হন।

শেষ দিকে ৪৫ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেললেন গার্ডনার। তবে তাকে বাকিরা সঙ্গ দিতে পারেননি। ফলে পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বোলারদের মধ্যে শ্রী চরণী ও দীপ্তি শর্মা ২ করে উইকেট নেন। ১ করে উইকেট নেন ক্রান্তি, আমনজ্যোৎ ও রাধা যাদব।

৩৩৯ রান তাড়া করা সহজ ছিল না ভারতের জন্য। বিশেষ করে যেখানে ফর্মে থাকা প্রতীকা রাওয়ালকে এই ম্যাচে পায়নি ভারত। দলের গুরুদায়িত্ব ছিল তারকা ব্যাটার স্মৃতি মান্ধানার কাঁধে। শেফালি বর্মা দুটো চার মারলেও বেশিক্ষণ টিকে থাকেননি। ১০ রান কিম গার্থের বলে আউট হন তিনি। ২৪ রানের মাথায় লেগ সাইডের বল মারতে গিয়ে আউট হন স্মৃতিও। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। রিভিউ নেয় অস্ট্রেলিয়া। সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়।

মান্ধানার বিদায়ের পর জেমাইমা ও হারমানপ্রীতের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। ধীরে ধীরে আগ্রাসী হত শুরু করেন। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের রান তোলার গতি প্রায় সমান ছিল। দুই ব্যাটারই শতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ৮৯ রানের মাথায় সাদারল্যান্ডের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন হারমান। অধিনায়ক আউট হওয়ায় জেমাইমা ঠিক করে নেন, শেষ পর্যন্ত তিনি টিকে থাকবেন। সেটাই করলেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছিল জেমাইমা। রান না পেয়ে বাদও পড়েছিলেন এক ম্যাচে। সেই জেমাইমা শতরান করে ভারতকে ফাইনালে তুললেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রইলেন ১৩৪ বলে ১২৭ রানে।