
সাইফ হাসানকে নিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন সৌম্য সরকার। সতীর্থ ব্যাটার ব্যক্তিগত ফিফটির পর ফিরলেও টিকেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নার্ভাস নাইনটিতেই কাটা পড়লেন। ব্যক্তিগত ৯১ রানের মাথায় বিদায় নিয়েছেন সৌম্য। দলীয় ১৮১ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেটের পতন হলো বাংলাদেশের। এর আগে ৮০ রানে সাজঘরে ফিরেছিলেন সাইফ।
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার চলমান ওয়ানডে সিরিজে সব ছাপিয়ে আসল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিল যেন মিরপুরের ‘কালো’ উইকেট। প্রথম দুই ম্যাচ ছিল লো স্কোরিং। সেখান থেকে আজ দৃশ্যপট পুরোপুরি বদলে গেছে। আগের দুই ওয়ানডেতে কোনো রকমে দুইশো পেরোনো বাংলাদেশ আজ ১৬ ওভার শেষেই শতরান পেরিয়ে যায়। উদ্বোধনী জুটিতে আজ হয়েছে একগাদা রেকর্ড।
মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। টাইগার দুই ওপেনার সৌম্য ও সাইফ মিলে ওপেনিংয়ে ১৫২ বলে ১৭৬ রানের জুটি গড়েন। ওয়ানডেতে উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। সর্বোচ্চটি ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। লিটন–তামিম করেন ২৯২ রান। এ ছাড়া প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হয়েছে। ওয়ানডেতে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে আগের সেরা উদ্বোধনী জুটি ছিল ১৪৪ রানের।
এর আগে মিরপুরের কালো পিচে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পুরো ৫০ ওভার স্পিন দিয়ে করিয়ে রেকর্ড গড়েছিল সফরকারী ক্যারিবীয়রা। আজও স্পিন আক্রমনেই শুরুটা করে তারা। যদিও আকিল হোসেনের প্রথম ওভারেই দুই চার মেরে ঝড়ের বার্তা দিয়েছিলেন সাইফ। এরপর আগ্রাসী রূপে হাজির হয়েছিলেন সৌম্য সরকার।
স্পিনারদের জন্য দারুণ উইকেটে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পেয়ে যায় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে পঞ্চাশ আসে মাত্র ৪৬ বলে। যদিও ধাক্কাটা প্রায় দিয়ে দিচ্ছিলেন খ্যারি পিয়ের। তবে একটুর জন্য বেঁচে যান সাইফ হাসান। বাঁ-হাতি স্পিনারের বল পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন সাইফ। ব্যাটের কানায় বলের স্পর্শ বুঝতে পারেননি আম্পায়ার। তিনি এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন ব্যাটসম্যান। তাতে বেঁচেও যান সে যাত্রায়।
স্পিনে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না দেখে দশম ওভারে পেস বোলিং অলরাউন্ডার জাস্টিন গ্রেভসের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শাই হোপ। তার ওভারে দুটি চার মেরে সৌম্য বুঝিয়ে দেন যেন আজ কাউকেই ছাড়া হবে না। ৪৮ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ করেন সৌম্য। ওয়ানডেতে এটি সৌম্যর ১৪তম পঞ্চাশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ষষ্ঠ।সৌম্যর পর বেশিক্ষণ সময় নেননি সাইফও। ৪৪ বল মোকাবিলায় ওয়ানডেতে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নেন।
অ্যালিক অ্যাথানেজকে স্লগ সুইপ করে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়। টাইমিংয়ে গড়বড় করে শুধু ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচই দিতে পেরেছেন। ২৩১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৪৪ বলে ২৮ রান করে ফিরেন হৃদয়। ২৫২ রানে এসে আউট হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪৩তম ওভারে পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলেছিলেন নাজমুল হোসেন। গুড়াকেশ মোতি সহজ ক্যাচটি নিতে পারেননি। তিন বল পরেই অবশ্য বিদায় নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক। নিজের বলেই পেছনে দৌড়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছেন অ্যালিক অ্যাথানেজ। ব্যাটিংয়ে নেমেছেন মাহিদুল ইসলাম। বাংলাদেশের বর্তমান সংগ্রহ ৪৫ ওবারে ৪ ওইকেটে হারিয়ে ২৫৯।