
দেশের তৃণমূল ফুটবলের উন্নয়নের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) ৫ কোটি টাকা দিয়েছে। এই অর্থ ব্যয় হবে ‘তারুণ্যের উৎসব’ অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আঞ্চলিক ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ আয়োজনের জন্য।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বরাদ্দকৃত অর্থ জেলার ফুটবলকে আরও শক্তিশালী করতে এবং স্থানীয় খেলোয়াড়দের সুযোগ বাড়াতে কাজে লাগবে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থ পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। চিঠিতে সাতটি শর্ত উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, ব্যয়ের প্রতিটি খাত সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে, এক খাতের অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া ব্যয়ের বিল ও ব্যাংক বিবরণী সংরক্ষণ করে বার্ষিক নিরীক্ষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং আয়কর ও ভ্যাট কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।
বাফুফের তারুণ্যের উৎসব আন্তজেলা চ্যাম্পিয়নশিপ কমিটির প্রধান ও সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘৫ কোটি টাকা আমরা পেয়েছি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছ থেকে। বাকি ৫ কোটি টাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে আসবে বলে আশা করি। বাকিটা স্পনসরদের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।’
এর আগে জানা গিয়েছিল, বাফুফে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সরকারের সহায়তায় দেশে তিনটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে। এগুলো হলো আন্তজেলা হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট, ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্ট ও মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল।
এই তিন টুর্নামেন্টের মোট বাজেট প্রায় ১৬ কোটি টাকা বলা হলেও বাস্তবে বাজেট দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটিরও ওপরে। এর মধ্যে ৫ কোটি টাকা দিয়েছে এনএসসি। বাকি অর্থের একটি অংশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এবং বাকি অংশ স্পনসরদের কাছ থেকে আসবে বলে বাফুফে আশা করছে।
আগামী ৩০ আগস্ট মুন্সিগঞ্জে আন্তজেলা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া উপস্থিত থাকবেন। টুর্নামেন্টে দেশের ৬৪টি জেলা অংশ নেবে এবং হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে খেলা হবে। প্রথম রাউন্ডে দলগুলোকে আটটি ‘পটে’ বা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে, যা জুলাই আন্দোলনের আট শহীদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এবারের আসরে মোট ১১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
নভেম্বরে ঢাকায় আসবেন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভাপতি সালমান বিন ইব্রাহিম আল খলিফা। তাঁর উপস্থিতিতে ফাইনাল আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে বাফুফে।
একসময় দেশে সব জেলাকে নিয়ে শেরেবাংলা কাপ ফুটবল হতো। দীর্ঘ ১৩ বছর বিরতির পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আবারও আয়োজন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের ইতিহাসে শেরেবাংলা কাপ ও সোহরাওয়ার্দী কাপ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল স্মরণীয় হয়ে আছে। এই দুই টুর্নামেন্ট থেকেই উঠে এসে অনেক ফুটবলার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।
এবার বড় পরিসরে আন্তজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা প্রথম জানানো হয় গত ১১ এপ্রিল ঢাকার একটি হোটেলে, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।