হাজার হাজার ছাত্র–জনতা জীবন দিয়েছে শুধু ক্ষমতা বদলের জন্য নয়; বরং যারা বিদেশিদের তাবেদারি ও প্রভুত্ব কায়েম করেছিল, তাদের উৎখাতের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য তারা জীবন দিয়েছিল। আজ যদি কেউ এ বিষয়টি বুঝতে না পারে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই—আপনারা মনে করেছিলেন ওয়ানটুর মধ্যে ক্ষমতায় যাবেন; সেই দিন ভুলে যান। যারা দেশকে ভালোবাসে, যারা মানবতাপ্রেমিক—তারা আজ রাজপথে নেমে এসেছে। দেশের মানুষ অপেক্ষায় আছে, কবে নির্বাচনের বাক্স আসবে। ইসলামের পক্ষে ও মানবতার পক্ষে থাকা জনগণ ভোটবাক্স ভরে দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে—মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে আন্দোলনরত আট দলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, ক্ষমতাপ্রেমিকরা বারবার ক্ষমতায় গেছে; কিন্তু কী উপহার দিয়েছে? তারা শুধু ‘নতুন শাড়িতে পুরোনো বউ’ উপহার দিয়েছে। তাই নতুন সাজে পুরোনো প্রতারণা আর ধোঁকা দিতে পারবে না। ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ। বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। এ দেশ রক্ষার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি।
তিনি বলেন, ৫৩ বছর স্বাধীনতার পর আজ আমরা সুযোগ পেয়েছি। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নতুন করে ইতিহাস লিখবে—দুঃখজনক ইতিহাস। আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে দেশকে ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পর ভেবেছিলাম, দেশ সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি রোধ হবে। কিন্তু সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগেই এক শ্রেণির ক্ষমতালোভী শুধু পাগল নয়—‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আবু সাঈদ যেভাবে দুই হাত প্রসারিত করে দেশকে ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন—তা কোনো চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় বসাতে নয়, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার জন্য নয়। তাই ক্ষমতালোভীদের বলতে চাই—ক্ষমতা, দাপট ও কালোটাকার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার দিন ভুলে যান; সেই দিন আর নেই। জনগণ এবারে তাদের ‘না’ বলে দেশ থেকে উৎখাত করবে, ইনশাআল্লাহ।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরে জামায়াতে ইসলামীসহ আট সমমনা দলের বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের পর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন— বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম।
এর আগে সমাবেশের শুরুতে বক্তব্য দেন— রংপুর মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুল হুদা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রংপুর মহানগর সেক্রেটারি আমিরুজ্জামান পিয়াল, জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর আমির এটিএম আজম খান এবং জামায়াতে ইসলামীর রংপুর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানীসহ স্থানীয় নেতারা।



