Image description

সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা ‘কিছু রাজনৈতিক দলের অযৌক্তিক দাবি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পিআর পদ্ধতি দাবি করা দলগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, পিআর কী? ব্যাপারটা তো আপনাদের পরিষ্কারই করছেন না। আপনি কী ধরনের পদ্ধতি চান, যাতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে? আমরা কি কখনও জনগণকে জিজ্ঞাসা করেছি? এই ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে যান না। সেখানে একজন লোককে বলেন, এতদিন আপনি যেভাবে প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন, আমরা নতুন একটি পদ্ধতি চাচ্ছি যাতে ভোটের মূল্য থাকবে, যাতে অংশগ্রহণ আনুপাতিক হারে হবে। সেখানে আপনি কোনো ব্যক্তিকে নয়, দলকে ভোট দেবেন, এবং দল এমপি মনোনীত করবে। আপনার এই এলাকায় নির্দিষ্ট কোনো এমপি থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, আপনি কোনো প্রার্থীকে ভোট দেবেন না। এই কথাগুলো কী বলছেন এলাকার মানুষজনকে… তাদের মতামত চাইছেন কি তারা রাজি নাকি রাজি নয়? যখন এই নিয়ে (পিআর) জোর দেওয়া হয়, তখন তো সন্দেহ করা যায় যে এটা একটা অযৌক্তিক চেষ্টা, যার অনিবার্য পরিণতি হতে পারে নির্বাচনের ক্ষেত্রে।

নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে জুলুম করা হচ্ছে বা জবরদস্তি করা হচ্ছে, এবং এটার ভিত্তিটা দুর্বল, সাধারণ মানুষ এটির মধ্যে প্রাসঙ্গিক করা হয়নি। সেহেতু এটা নিয়ে খুব বেশি ঝামেলা হবে বলে আমরা মনে করি না।

একই সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যদি আপনি এটা (পিআর) রাজি হন তবুও এই নির্বাচনে তা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। কারণ সংবিধান সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব নয়। আর সংবিধান সংশোধন করার ক্ষমতা সংসদের। কাজেই, করতে হলেও এর পরের নির্বাচনের প্রশ্ন উঠবে।’

নজরুল বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দলের যেকোনো রাজনৈতিক নেতার কোনো চিন্তা-ভাবনা থাকতে পারে… হতে পারে সেটা খুবই ভালো, হতে পারে যুগান্তকারী। কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যেকোনো প্রস্তাব ভালো হোক বা মন্দ হোক, বিজ্ঞ মানুষ বলুক এবং আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বলুক, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, ততক্ষণ তা জনগণের জন্য কার্যকর হতে পারে না, হওয়া উচিত নয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেখুন, আমাদের দেশে শুধু ভোটটা কীভাবে দেবেন—ব্যালট পেপারে দেবেন, সিল মারবেন, নাকি ইভিএম মেশিনে টিপ দেবেন—এ নিয়ে কত বছর ধরে আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত কি তার ফয়সালা হয়েছে? আর আপনি গোটা নির্বাচন ব্যবস্থা বদলাতে চাচ্ছেন। সারাজীবন মানুষ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে, আপনি সেটা পিআর এর মাধ্যমে বদলাতে চাচ্ছেন। আপনি কোনো প্রার্থীকে ভোট দেবেন না, কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ভোট দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিনিধি নির্ধারণ করবে দল, জনগণ নয়। তারা কোনো নির্দিষ্ট এলাকার এমপি হবেন না, দেশের এমপি হবেন। জনগণ তাদের সমস্যা নিয়ে কার কাছে যাবে তা নির্ধারিত থাকবে না। এরকম বড় পরিবর্তন দেশের মালিক জনগণকে পরিষ্কারভাবে বোঝানো হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে জাতীয় কমিটির সদস্য, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, মাহবুবে রহমান শামীম, জিকে গউস, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, শামা ওবায়েদ ও শাহিন শওকত উপস্থিত ছিলেন।