
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আয়োজনের পর ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের উদ্যোগে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) ও প্রধানমন্ত্রীর রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।
রোববার (১৭ আগস্ট) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
কক্সবাজারে ২৫ আগস্ট ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষক সম্মেলনটি জাতিসংঘের বৃহত্তর সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ সম্মেলন রোহিঙ্গা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু একসময় আন্তর্জাতিক আলোচনা থেকে প্রায় বাদ পড়ছিল। এ প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানান। জাতিসংঘ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দিয়ে সর্বসম্মতিতে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে ১০৬টি দেশ এ সম্মেলনকে স্পন্সর করেছে।
সম্মেলনে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক দূত, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। কক্সবাজারের শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এবং বিশ্বের কয়েকটি দেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।
২৪ থেকে ২৬ আগস্ট তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শরণার্থীশিবির প্রদর্শনী থাকবে। ২৪ ও ২৫ আগস্ট পাঁচটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই কর্ম অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য হলো—রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশার সঞ্চার, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ এবং রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান।
রোববার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এসব বিষয়কে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকারের সর্বশেষ উদ্যোগের বিবরণ বিদেশি মিশন প্রধানদের অবহিত করেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল শুরু হয়। দীর্ঘ আট বছর পেরিয়ে গেলেও বৈশ্বিক মনোযোগ কমেছে, বিশেষ করে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের পর। এই সময়ে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি।