Image description

গ্রীষ্ম আগেই শুরু হয়েছে। গ্রীষ্মের শুরুতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। এ গরমে ক্লান্তি দূর করতে কিংবা নানা রোগের উপশম ঘটাতে বেলের জুড়ি নেই। বেলগাছের পাতা, ফল ও ছালে আছে ঔষধি বহুগুণ। কচি বেল খাওয়াই উত্তম। তবে পাকা বেলও বেশ উপকারী।

বেলের বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে: পাকস্থলীর আলসার, পাইলস রোগে উপকারী। এটি শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। অন্ত্রের কৃমিসহ অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করে ডায়রিয়া এবং আমাশয় প্রতিরোধ করে। বেলের ল্যাক্সিটেভ গুণ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং আমাশয় রোগে খুব কার্যকরী ভূমিকা  পালন করে। বেল হজমেও উপকারী। বেলে ন্যাচারাল ডাই ইউরেটিক আছে, যা শরীরে পানি জমা প্রতিরোধ করে। বেলপাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে চোখের ছানি কমে যায়।

এ ছাড়া ভিটামিন ‘এ’ মিউকাস মেমব্রেনের গঠন এবং চামড়ার ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে। ত্বককে সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে বেলের শাঁস এবং ত্বকের স্বাভাবিক রং বজায় রাখে। বেলের থায়ামিন ও রিবোফ্লোবিন হার্ট এবং লিভার ভালো রাখে। বেল থেকে পাওয়া বেটাক্যারোটিন রঞ্জক মানবদেহের টিউমার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে মহিলারা নিয়মিত বেল বা বেলের শরবত খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। প্রস্টোজেন হরমোন লেভেল বাড়িয়ে মহিলাদের ইনফার্টিলিটির ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া প্রসব-পরবর্তী ডিপ্রেশন কমাতেও খুবই কার্যকরী। বেলের ভিটামিন ‘সি’ স্কার্ভি প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ‘সি’ হলো শক্তিশালী প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মানবদেহের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে। জন্ডিসের সমস্যায় পাকা বেল গোলমরিচের সঙ্গে শরবত করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

সর্দি হলে বেলপাতার রস এক চামচ খেলে সর্দি ও জ্বরভাব কেটে যায়। বেলপাতার রস ঠাণ্ডা ও ক্রনিক কফে উপকারী। জয়েন্টের ব্যথা ও উপশম করে। বেলপাতার রস মধু, গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে জন্ডিস নিরাময় হয়। বেল বেটাক্যারোটিনের ভালো উৎস, যা থেকে ভিটামিন ‘এ’ তৈরি হয়। ভিটামিন ‘এ’ চোখের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোকে পুষ্টি জোগায়।

যারা নিয়মিত বেল খায়, তাদের চোখের বিভিন্ন অসুখ হওয়ার প্রবণতা থাকে তুলনামূলকভাবে কম। তবে নিয়মিত পাকা বেল খাওয়া উচিত নয়। প্রতিদিন পাকা বেল খেলে স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে। পাকা বেল একবারে বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে প্রতি ১০০ গ্রাম বেলের শাঁসে পাওয়া যায় পানি ৫৪.৯৬-৬১.৫ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮-২.৬২ গ্রাম, স্নেহ পদার্থ ০.২-০.৩৯ গ্রাম, শর্করা ২৮.১১-৩১.৮ গ্রাম, ক্যারোটিন ৫৫ মিলি গ্রাম, থায়ামিন ০.১৩ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেবিন ১.১৯ মিলিগ্রাম, এসকরবিক এসিড ৮-৬০ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ১.১ মিলিগ্রাম ও টারটারিক এসিড ২.১১ মিলিগ্রাম।