হবিগঞ্জের মাধবপুরে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের এসপি রেজাউল ইসলাম কর্তৃক সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইনের সঙ্গে শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এসপি রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখায় অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার অলিপুর এলাকায় মহাসড়কের কাজ চলার কারণে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এ সময় শাহজীবাজার আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় হাইওয়ে পুলিশের এসপি রেজাউল ইসলাম পুলিশ বক্স থেকে বের হয়ে আসলে ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইন সালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানাতে হাত বাড়ান। কিন্তু এসপি রেজাউল ইসলাম তার সালাম উপেক্ষা করে গাড়িতে ওঠেন। পরে ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইন নিজেকে ক্যাম্প কমান্ডার হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পরও এসপি রেজাউল ইসলাম বলেন, “ও তুমি ক্যাপ্টেন ইমাম।”
ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইন তাকে ‘আপনি’ সম্বোধন করার জন্য অনুরোধ করলে এসপি রেজাউল ইসলাম বলেন, “তোমার সিও থেকে জেনে নিও, তোমাকে কী বলে ডাকতে হবে। তুমি ইউনিফর্ম পরো, তোমাকে আমি ‘তুমি’ করে বলতে পারব।” কথোপকথনের সময় তিনি অসম্মানজনকভাবে গাড়ির দরজা বন্ধ করেন।
সিলেট বিভাগের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার সময় জানা যায়, ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইন তাকে কথোপকথনের শুরুতে ‘ভাই’ সম্বোধন করেছিলেন, যা নিয়ে কিছুটা রাগান্বিত হয়ে এসপি রেজাউল ইসলাম ওই আচরণ করেন। সেনাবাহিনী ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্যাপ্টেন ইমাম হোসাইনকে প্রয়োজনীয় প্রেষণা প্রদান করেছে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, এসপি রেজাউল ইসলামের আচরণ সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। এ ধরনের আচরণ ভবিষ্যতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে বৈরিতা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রেজাউল ইসলামের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ঘটনাটি নিয়ে হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি আরও জানায়, অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে এসপি রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে আইন ও বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্তঃবাহিনীর সঙ্গে বিদ্যমান সুসম্পর্ক যাতে কোনোভাবে ক্ষুণ্ণ না হয়, সে বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
